Tuesday

পাত্রী ক্লাস সেভেন, পাত্র প্রাইমারি …




জিপটা এসে থামল তখনি। ঝপাঝপ নেমে এলেন জনা পাঁচেক খাঁকি উর্দি। বেশি বাক্যব্যয় না করে নাবালিকা বিয়ে দেয়ার অপরাধে হাতেনাতেই আটক করে জিপে তুলে নেয়া হল কাজী সাহেবকে। সঙ্গে মেয়েটির বাবাও।

রানিনগর থানার মিনিট পনেরোর অপারেশনের মাঝেই অবশ্য তখন পান মুখেই পাততাড়ি গুটিয়েছেন বরযাত্রীরা। খেতে বসা নিমন্ত্রিতরা তখন পালাতে পারলে বাঁচেন। গত মঙ্গলবার পুলিশের এমনই অচেনা তৎপরতা দেখল কাতলামারির রামনগরপাড়া।

পুলিশ জানিয়েছে, পাত্রীর বয়স তেরো বছর। কাতলামারি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী সে। আর পাত্র? মেরেকেটে দশ। পাশের গ্রাম নটিয়ালের প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া। এ বিয়ের পেছনে রয়েছে, সেলিম শেখ নামের স্থানীয় এক মৌলভীর তৎপরতা। বাল্যবিয়ে দেয়ায় তাকেও আটক করা হয়েছে।

পাত্রীর বাবার দাবি, ‘নটিয়ালের সেলিম সেখ বেশ কিছু দিন থেকে আমাকে খুব করে ধরে ছিল জানেন, মেয়ের বিয়ের জন্য। শেষে তার পিড়াপিড়িতে রাজি হই নগদ ২৩ হাজার টাকা অগ্রিম পণও দিয়েছিলাম।’

তবে ওই মৌলভীর দাবি, বিয়ে হবে নিছক খাতা-কলমে। ছেলেমেয়েরা বড় হলে বছর তিনেক পরে শ্বশুর বাড়ি যাবে মেয়ে। আর পাত্রের বাবা সেলিম মোল্লা পেষায় ছুতোর মিস্ত্রী। তিনি পলাতক। তার ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন, পণের টাকার লোভেই সে এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।

রানিনগর ২ ব্লকের বিডিও আশিষ রায় বলেন, ‘‘আমরা নানাভাবে সচেতনতা চালানোর পরেও এমনটা হচ্ছে ভাবতে খারাপ লাগছে। আরও প্রচার চালাতে হবে।’’

আর রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের আসরাফুজ্জামান বলেন, ‘‘পাত্র ও পাত্রীর বয়স দেখে অবাক হয়েছি, এমনটা আগে কখনও দেখিনি। আমরা বুঝতে পারছি বাল্য বিবাহ নামক সামাজিক ব্যাধিটা আমাদের সমাজে থেকে গিয়েছে এখনও।’’ আনন্দবাজার

No comments:

Post a Comment