নারীদেহের যৌনাঙ্গ সমূহের পরিচয় স্বতন্ত্র ধরনের। মেয়েদের যৌনাঙ্গ গুলি পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি জটিল এবং সূক্ষ্ম। বিভিন্ন অবস্থাতে সেগুলির নানার রকমের বৈচিত্র ঘটে থাকে।
মেয়েদের অঙ্গাদি মুদ্রিতকলি কুমারী অবস্থায় থাকে একরকম, সদ্য প্রস্ফুটিত যৌবন অবস্থায় থাকে একরকম, সন্তানগর্ভা অবস্থায় থাকে একরকম, সন্তানবর্তী প্রসূত্রি অবস্থায় থাকে একরকম, আর নির্বাপিত ক্রিয়াবিবর্জিত অবস্থায় থাকে একরকম। এই পাঁচরকম বিভিন্ন অবস্থায় মধ্যে যৌবনে গমন ও তার পরবর্তী অবস্থায় আমাদের বিশেষ ভাবে আলোচ্য।
মেয়েদের যৌনাঙ্গ গুলিকে মোট দুই ভাগে ভাগ করা যায়। তার মধ্যে কতকগুলি বাইরে আছে বলে প্রকাশ্য। আর কতকগুলি ভিতরে আছে বলে অপ্রকাশ্য।
নারীর নিচের যৌনাঙ্গ
বাইরের দিকে যা রয়েছে তাও দাঁড়ানো অবস্থায় বাইরের থেকে দেখা যায় না। শুধু তলপেটের নিচে দেখা যায় মাত্র, একটু তিনকোণ স্থান, যার নাম কামাদ্রি। এর নিচেই লুকিয়ে রয়েছে যনির গুহা। উত্তান অবস্থায় অর্থাৎ চিৎ হয়ে শুয়ে জানু দুটি ফাঁক করলে তবেই তার প্রবেশদ্বার দেখা যায়।
এই অবস্থায় দেখলে প্রথমেই নজরে পড়ে কুঁচকি দুটির মধ্যবর্তী স্থানে কোষার মতো উঁচু উঁচু দুটি মাংসমেদের স্তবক, নরম চামড়া দিয়ে ঢাকা, এবং সেই দুটির মাঝখানে লম্বা একটি ফাটল। ফাটলের অন্তরালে কি আছে, মাংস স্তবক দুটি দুপাশ থেকে ফাঁক করে না ধরলে তা দেখা যাবে না। এই স্তবকের চামড়ার উপর ইতস্তত অল্প বিস্তর লোম গজিয়ে আছে। প্রবেশ পথের গোড়াতেই ফটকের দুটি বদ্ধ পাল্লার মতো এই লোমযুক্ত স্তবক দুটি ভিতরের দৃশ্যকে আড়াল করে আছে। এই যৌনাঙ্গের ইংরেজী নাম লেবিয়া মেজরা, বাংলায় বলা যেতে পারে বড় দরজা।
এই অবস্থায় দেখলে প্রথমেই নজরে পড়ে কুঁচকি দুটির মধ্যবর্তী স্থানে কোষার মতো উঁচু উঁচু দুটি মাংসমেদের স্তবক, নরম চামড়া দিয়ে ঢাকা, এবং সেই দুটির মাঝখানে লম্বা একটি ফাটল। ফাটলের অন্তরালে কি আছে, মাংস স্তবক দুটি দুপাশ থেকে ফাঁক করে না ধরলে তা দেখা যাবে না। এই স্তবকের চামড়ার উপর ইতস্তত অল্প বিস্তর লোম গজিয়ে আছে। প্রবেশ পথের গোড়াতেই ফটকের দুটি বদ্ধ পাল্লার মতো এই লোমযুক্ত স্তবক দুটি ভিতরের দৃশ্যকে আড়াল করে আছে। এই যৌনাঙ্গের ইংরেজী নাম লেবিয়া মেজরা, বাংলায় বলা যেতে পারে বড় দরজা।
যৌনাঙ্গের বিশেষ অংশ লেবিয়া মেজরা
এই বড় দরজা দুটি ফাঁক করে ধরলে তার পিছনেই দেখা যাবে দুটি লেবিয়া মাইনরা, অর্থাৎ ছোট দরজা। এই দুটি বড় দরজার চেয়ে অনেক নরম চামড়ার তৈরি এবং দেখতেও পাতলা। আসলে বড় দরজা চামড়া দিয়ে ঢাকা, কিন্তু এই দুটি ঝিল্লী দিয়ে ঢাকা। এই দুই জোড়া দরজা পিছনের দিকে অর্থাৎ গুহ্যদেশের দিকে খানিকটা পর্যন্ত গিয়ে সেখানকার পাতলা চামড়াতে এসে মিশে গেছে। এইখানের হলো নারীদের প্রধান যৌনাঙ্গ অথ্যাৎ যোনির শেষ প্রান্ত। একে বলে মূলাধারপীঠ। এরপর থেকে আরো পিছনে মলদ্বার পর্যন্ত যে চামড়ায় ঢাকা স্থানটুকু, তার নাম মূলাধার। শুধু কুমারী অবস্থাতেই ঐ মূলাধারপীঠ স্পষ্ট সীমারেখা মতো দেখা যায়। বহুবার সঙ্গমের পর কিংবা সন্তান প্রসবের পর সেটি মূলাধারের উপরের চামড়ারসঙ্গে মিলিয়ে যায়।
সুমুখ দিকে খানিকটা এসেও ছোট দরজা দুটি খুব পাতলা হয়ে এক জায়গাতে মিলিয়ে গেছে। ঠিক তার সামনেই প্রায় হাড়ের কাছাকাছি জায়গাতে উঁচু হয়ে আছে। পুরুষের লিঙ্গের অনুকরণে খুব ছোট একটি বোটাঁর মতো ক্লিটরিস, যাকে সংস্কৃতে বলে ভগাস্কুর, অথবা শিশ্নিকা। এটি পুরুষের শিশ্নের অনুকরণে তৈরি বলেই ওর ঐ নাম। পুরুষের লিঙ্গের মুন্ডের উপর যেমন একটি ছত্র আছে, এর উপরেও তেমনি একটি ছত্র একে ঘিরে আছে। অনেক সময় এই অঙ্কুরটি এতই ছোট থাকে যে ছত্র ভালো করে ফাঁক না করলে তা মোটে দেখাই যায় না। কিন্তু দেখা না গেলেও আঙ্গুল দিয়ে নাড়লে এটিকে শক্ত একটি বোঁটার মতো স্পষ্ট টের পাওয়া যায়। এই সামান্য অঙ্কুরের যৌন স্পর্শসুখ অনুভব করবার শক্তি অনেক বেশি, এমন কি পুরুষের লিঙ্গমুন্দের চেয়েও বেশি। কোনো সামান্যমাত্র মৃদু স্পর্শে এটি উত্তেজিত হয়ে কঠিন হয়ে উঠে। বিস্তর সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম নার্ভের অনুভূতিসম্পন্ন তন্ত এখানে এসে জড়ো হয়েছে। পুরুষের প্রধান যৌনাঙ্গ লিঙ্গের মতো স্পঞ্জজাতীয় পদার্থ দিয়ে এটিও তৈরি, এবং উত্তেজিত হলে এটিও রক্তাধিক্যের ফলে সুপ্ত অবস্থা থেকে খাড়া হয়ে জেগে ওঠে। যদিও আকারে খুবই ছোট, কিন্তু যৌন সুখ অনুভব করবার এইটিই হলো নারীদেহের প্রধান কামকেন্দ্র। সঙ্গমের সময় এইটির উপর নিয়ত ঘর্ষণ লাগতে থাকে। তখন ওরই উত্তেজনাতে সর্ব শরীরে যে ঘন ঘন রোমাঞ্চ উপস্থিত হয়, তাকে বলে বেপথু। ওর ছত্রটি তখন আপনাআপনি ছড়িয়ে ফাঁক হয়ে গিয়ে অঙ্কুরের মুখটি উত্তেজিত অবস্থায় আরো ঘর্ষণ লাভের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
ঐ অঙ্কুর এবং তার চারপাশের ছত্রের ব্যবধানে জামার পকেটের কোনগুলির মতো নানারকম খাঁজ করা আছে। ঐ সব খাজের মধ্যে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম গ্ল্যান্ড থেকে একরকম তৈলাক্ত স্বেদবস্ত নির্গত হয়। তারও ইংরেজী নাম স্মেগমা, যে জিনিসটির কথা পুরুষ লিঙ্গের বেলাতেও একবার বলা হয়েছে। সদ্যনিঃসৃত তাজা অবস্থায় এর একটা মিষ্ট মিষ্ট সিঘ্রাণ আছে। স্ত্রীলোকের সারা অঙ্গে যে বিশেষ একরকম সুগন্ধ টের পাওয়া যায়, যা অনেক সময় পুরুষদের মনে উম্মাদনা আনে, তা সচরাচর এর থেকেই জম্মায়। আমরা যে পদ্মিনী শঙ্খিণী প্রভৃতি নারীদের এক একরকম দেহগন্ধের বর্ণনা শুনে থাকি, তার সঙ্গে এই জিনিসের গন্ধেরই সম্ভবত বিশেষ সম্পর্ক আছে। কিন্তু ঐ স্মেগমার তাজা অবস্থাতেই তার সেই মিষ্ট সদগন্ধটুকু থাকে। স্মেগমা শুকিয়ে বাসি হয়ে লেগে থাকলে দু-একদিনের মধ্যেই সেটা পচে যায় এবং তখন তার থেকে তীব্র একটা দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে। শুধু তাই নয়, মেয়েদের মূত্রত্যাগের পরে সেই মূত্র ঢুকে গিএ তারও কিছু কিছু অংশ ঐ পকেটের মতো ঘুঁজি ঘুঁজি খাঁজগুলির মধ্যে ঢুকে যায়, এবং স্মেগমার সঙ্গে মিশে গিয়ে সেটিকে আরো বেশি দুর্গন্ধ যুক্ত করে। মেয়েদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো ভাবে যে, যে-অঙ্গটি সর্বক্ষণ ঢাকাই রয়েছে সেখানে অমন একটু দুর্গন্ধ থাকলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু অঙ্গ ঢেকে রাখলেও তার গন্ধ ঢাকা থাকে না। মেয়েদের পক্ষে প্রস্রাবের পরে ও স্নানের সময় ওখানকার ছত্রচর্ম ফাঁক করে অঙ্কুরের আসপাশে সমস্ত খাঁজগুলি পানি-সাবান দিয়ে অথবা শুধুই প্রচুর পানি দিয়ে প্রত্যহ পরিস্কার করে ধুয়ে ফেলা উচিৎ, এবং শুকিয়ে যাওয়া বাসি স্মেগমা লেগে থাকলে তাও সম্পূর্ণরূপে দূর করে ফেলা উচিৎ। মেয়েদের পরিছন্ন থাকবার পক্ষে এটি একটি বিশেষ নিয়ম। স্ত্রী যৌনাঙ্গ বা যোনির কোনো অংশকেই দুর্গন্ধ যুক্ত হতে দেওয়া উচিৎ নয়। দুর্গন্ধ মাত্রই অপরিচ্ছন্নতার পরিচায়ক। আর ওতে বিষাক্ত জীবাণুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে সহজেই যোনিস্থানে নানারকম কষ্টদায়ক রোগ এসে উপস্থিত হতে পারে। পচা জিনিসের সন্ধান পেলেই রোগের জীবাণু সেখানে এসে বাসা বাঁধে। মেয়েদের যোনিস্থানে এটার খুবই সম্ভাবনা। তার কারণ মেয়েদের মল নির্গমের স্থান, ঋতুস্রাব নির্গমের স্থান, মূত্র নির্গমের স্থান, আর স্মেগমা জম্মাবার স্থান, সমস্তই খুব কাছাকাছি। তাই এটার সঙ্গে ওটা মিশে নেবার বিষয়। ছোট দরজা দুটি ফাঁক করে ধরলে অঙ্কুরের ঠিক নিচেই খানিকটা লালবর্ণ ঝিল্লীছাওয়া প্রশস্ত জায়গা রয়েছে দেখতে পাওয়া যায়। ওকে ইংরেজীতে বলে ভেস্টিবিউল, বাংলায় বলা যায় দেউড়ি। এই দেউড়িতে দুটি ছোট বড় ছিদ্র বা রন্ধ্রমুখ আছে। তার মধ্যে একটি ছিদ্র খুবই ছোট। সেটি
আছে অঙ্কুরের একটু নিচেই। সেটি হলো মূত্রছিদ্র। এখান দিয়েই মেয়েদের মূত্র নির্গত হয়, এবং তা পুরুষদের মতো একটি নির্দিষ্ট সরু ধারে নির্গত হতে পারে না।
দ্বিতীয়টি হলো যোনিমুখ। একে ছিদ্রের বদলে বিবর বলাই উচিৎ, কারণ এর পরিধি প্রায় এক ইঞ্চির কম নয়। সঙ্গমের সময় পুরুষের প্লিরধান যৌনাঙ্গ দেউড়ি পার হয়ে এই ববরের মুখ দিয়ে ঢুকেই যোনিগুহাতে প্রবেশ করে। আবার প্রসবের সময় সন্তান এই বিবরের মুখ দিয়েই জরায়ু থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। বলা বাহুল্য তখন এর মুখটি চাড় পেয়ে অনেক বেশি বড় হয়ে যায়।
এই যোনিমুখের ফাঁকটি চিৎ হয়ে শুলেও খোলা গর্তের মতো দেখায় না। এটি দেখায় যেন অর্ধেক মুখবোজা এবড়োখেবড়ো একটা ফাটলের মতো। তার কারণ দুইপাশ থেকে ঠেলে আসা মাংসাদির দ্বার আর ভিতরকার যোনিগাত্রের সামনে ঠেলা চাপের দ্বারা এই গর্তের মুখটা প্রায় বোজার মতোই থাকে। যারা সন্তান প্রসব করেছে তাদের পক্ষে এটা তার চেয়ে আরো খানিকটা ফাঁক হয়ে যায় মাত্র। কিন্তু হাঁটু গেড়ে উবু হয়ে মাথাটা ও বুকটা মাটি সমান নিচু করলে পিছনদিক থেকে যোনিমধ্যে বায়ু প্রবেশ করে এবং তখন দেখা যায় যে দুই দিকের চাপ আলগা হয়ে ঐ গর্তের মুখটি খুলে ফাঁক হয়ে গেছে। ডাক্তারি পরীক্ষার সময় চিৎ করে শুইয়ে মেয়েদের যোনির মধ্যে কিছুই দেখবার উপায় নেই। স্পেকুলাম নামক যন্তের দ্বারা দুই দিক থেকে লেবিয়ার দরজা ফাঁক করে তখন যা কিছু দেখা চলে।
তবে সঙ্গমের সময় এত সহজে পুরুষ লিঙ্গ ওর মধ্যে প্রবেশ করে কেমন করে?
সেটাও এখানে বলে রাখা দরকার। দেউড়ির গায়ের অন্তরালে দুপাশে দুটি করে চারটি ছোট ছোট গ্ল্যান্ড লুকিয়ে আছে, তার সূক্ষ্ম নলগুলি যোনিগর্তের মুখের কাছেই উন্মুক্ত হয়েছে। যৌন উত্তেজনা এসে পড়লেই ঐ সকল গ্ল্যান্ড থেকে এক রকম পিচ্ছিল লালার মতো রস ঝরতে শুরু হয় এবং সমস্ত যোনিমুখটি সেই রসে ভিজে গিয়ে পিচ্ছিল হয়ে ওঠে। তাছাড়া লেবিয়া দুটিও উত্তেজনায় ফুলে ওঠে একটু ফাঁক হয়ে পড়ে। তখন সেই পিচ্ছিল যোনিমুখ দিয়ে সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত মাংসদন্ডৎ পুরুষ – লিঙ্গ অনায়াসে ঠেলে প্রবেশ করতে পারে। তার অগ্রগতির চাপে যোনিদ্বারের বোজা দেয়াল তখন দুপাশ থেকে আপনিই আরো বেশি ফাঁক হয়ে যায়। তবে যদি ঐ পিচ্ছিলকারী রস স্বভাবত পরিমাণে খুব কম হয়, কিংবা কারো পক্ষে যদি সেরস দেখা দিতে খুবই বিলম্ব হয়, তাহলে লিঙ্গ প্রবেশের সময় উভয় পক্ষেরই অল্পবিস্তর আঘাত লাগবার এবং নরম স্থানগুলি একটু একটু ছিঁড়ে যাবার সম্ভাবনা । এই সকল ক্ষেত্রে কিছু কৃত্রিম পিচ্ছিলকারী জিনিস দিয়ে যোনিমুখ ভিজিয়ে নরম করে নেওয়া দরকার হয়ে পড়ে।
আদৌ যারা অনুগত, অর্থাৎ আগে কখনো সঙ্গমে নিযুক্ত হয়নি, এমন আনকোরা কুমারীদের যোনিমুখ অধিকন্ত একটি পাতলা চামড়া দিয়ে অল্পাংশ কিংবা অধিকাংশ ঢাকা থাকে। পর্দাটিকে বলে হাইমেন, আমাদের ভাষাতে বলে সতীচ্ছদ কিংবা কুমারী-পর্দা। এই পর্দা যাদের যোনির গর্তমুখের অনেকখানি স্থান জুড়ে আছে, তাদের পক্ষে এটিকে না ছিড়ে ফেলা পর্যন্ত লিঙ্গ বা অন্য কোনো বস্তু যোনির মধ্যে সহজে ঢুকতে পারে না। তবে প্রথম সঙ্গমের সময় লিঙ্গের আঘাতে এটি প্রায়ই ছিঁড়ে যায়। লোকে তাই মনে করে এটি ছেড়া না থাকলেই বুঝতে হবে যে যোনিটি তাহলে আজ পর্যন্ত একবারও ব্যবহৃত হয়নি। সেই জন্য হয়তো এর নামও দেওয়া হয়েছিল সতীচ্ছদ। কিন্তু এরূপ ধারণা ভুল। সকলের পক্ষেই যে এমন ঘটবে তার কোনো মানে নেই। অনেকের সতীচ্ছদ লেগে থাকা সত্ত্বেও পাশে যথেষ্ট ফাঁক থাকার দরুণ না ছিঁড়ে সঙ্গম করতে পারা অনায়াসে সম্ভব। আবার অনেকের হয়তো আঙ্গুলের দ্বারা বা অন্য কোনো উপায়ে সতীচ্ছদটি আপনা থেকেই ছিঁড়ে গেচে, অথচ তখন পর্যন্ত তাদের প্রকৃত পুরুষ সংসরগএকবারও ঘটেনি। সুতরাং ওর ছেড়া বা না ছেঁড়ার দ্বারা কিছু মীমাংসা হয় না।
যোনিমুখের পরেই আসল স্ত্রী-যোনি, আমরা গুহা বলছি, সঙ্গমের সময় যার ভিতরে লিঙ্গ সম্পূর্ণরূপে প্রবেশ করে এবং যার ভিতর দিয়ে প্রতিমাসে ঋতুস্রাব নির্গত হয়। এটি হলো শরীরের ভিতরকারই যন্ত্র। প্রকাশ্য যৌন অঙ্গ একে বলা চলবে না। এরপর থেকে অন্যান্য সব কিছুই হলো ভিতরকার যন্ত্র।
এই যোনি আসলে একটি ফাঁপা নলের মতো একরকমের মাংসাধার মাত্র। কিন্তু ফাঁপা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি কখনো ফাঁক হয়ে থাকে না। এর সামনের দেয়াল এবং পিছনের দেয়াল দুটি দুদিক থেকে ঝুঁকে এসে নলের ভিতরকার সমস্ত পথটি বরাবর
বুজিয়ে রেখেছে। যখন ওর মধ্যে কিছু প্রবেশ করবে তখনই নলটি ফাঁক হয়ে যাবে, আবার সেটি বেরিয়ে এলেই অমনি বুজে যাবে।
স্ত্রীযোনির এই সঙ্গম প্রায় তিন ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এটি কিন্তু সরল রেখার মতো সোজা নয়। ভিতরে অগ্রসর হলেই জানা যাবে এটি উপর দিকে যেতে যেতে ক্রমশ সামনের দিকে একটু নুয়জের মতো বেঁকে রয়েছে। এর ভিতরের পরিধিরও মাপের কোনো স্থিরতা নেই। প্রয়োজন হলে মাংসপেশীর ক্রিয়ার দ্বারা এটি অনেকখানি
ফাঁদালো অথবা সংকুচিত হতে পারে। দুই রকম মাংসপেশী এর উপর ক্রিউয়া করে। একরকম সুমুখের দিকে আর একরকম ওর উপকার দিকে । সময় সময় ঐ রকম মাংসপেশী উত্তেজনায় তাড়াতাড়ি সংকোচন ও প্রসারণের ফলে কুন্থন ও আক্ষেপের মতো ক্রিয়া করতে পারে। সঙ্গমের সময় এর এই ক্রিয়ার দ্বারা লিঙ্গের উপর চাপ দিয়ে দিয়ে তাকে উত্তেজিত করিয়ে শুক্রপাত করাবার পক্ষে খুব সুবিধা হয়। এছাড়া সঙ্গমলাভের যখন মেয়েদের চরম তৃপ্তি ঘটে তখনও ঐ মাংসপেশীগুলির দ্বারাই যোনির মধ্যে পুনঃ পুনঃ ঐরূপ আক্ষেপ হতে থাকে। এই মাংসপেশীগুলির মলদ্বারের সঙ্গেও যোগ আছে, কাজেই এখানে আক্ষেপ হলে তখন সেখানেও তাই হয়। এই যোনিনালী, আর সামনের দিকে আছে মূত্রধার ও মূত্রনালী। ঐ দুই রকম নলের মাঝখানে সমান্তরালভাবে যোনিটি অবস্থায় করছে।
স্ত্রী যোনির ভিতরকার দেয়ালগুলি রুক্ষ। তার সারা গাত্র কুঁচকে কুঁচকে অনেকটা এবড়োখেবড়ো ধরনের হয়। এতে অল্প বাধাপ্রাপ্ত হওয়াতে সঙ্গমকালে লিঙ্গের ঘর্ষণের পক্ষে খুব সুবিধা হয়। এর দেয়ালের গায়ের চারিদিক থেকে একরকম দুধের মতো সাদা রস নির্গত হয়, তার দ্বারা এটি সর্বক্ষণ ভিজে ও নরম অবস্থাতেই থাকে। সেই রসের মধ্যে আছে কিছু ল্যাকটিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড যোনির স্বাস্থ্যরক্ষক ও জীবাণুনাশক। খুব বেশি তীব্র হলে এর দ্বারা পুংবীজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, কিন্তু প্রায়ই এটা তেমন বেশি তীব্র হয় না।
স্ত্রী প্যোরধান যৌনাঙ্গ যোনির নল বা গুহাটি উপর দিকে যেখান পর্যন্ত উঠে থেমে গেছে, অর্থাৎ যেখান পর্যন্ত গিয়ে গন্তব্য পথটি শেষ হয়েছে, সেখানটাকে বলে ওর ভল্ট বা ছাদ। কোনো কোনো ঘরের ছাদের মাথা ফুঁড়ে যেমন যেমন খানিকটা ভেন্টিলেটরের পাইপ নিচের দিকে ঝুলে থাকে, ঠিক তেমনিভাবে জরায়ুর মুখটি শক্ত খানিকটা লম্বা বোঁটার মতো হয়ে যোনিনলের ছাদ ফুঁড়ে নিচের দিকে ঝুলে আছে। যোনির মধ্যে আঙ্গুল চালিয়ে দিলে খানিকটা পর্যন্ত গিয়ে এই বোঁটাটি আঙ্গুলে ঠেকছে টের পাওয়া যায়। এমনি ভাবে ঝুলে থাকার দরুণ ঐ জরায়ুর বোঁটার সামনের দিকে খানিকটা এবং পিছন দিকে খানিকটা পকেটের মতো খাঁজ রয়ে গেছে। তার মধ্যে সামনের খাঁজটি অগভীর, পিছনের খাঁজটি অপেক্ষাকৃত কিছু গভীর। যনির মাপের চেয়ে যদি সঙ্গমকারীর লিঙ্গের মাপ কিছু বড় হয়, তখন লিঙ্গটি সামনের খাঁজে না ঢুকে ঐ পিছনের খাঁজে ঢুকে যায়, আর তার মধ্যেই শুক্রপাত করে।
স্ত্রী-যোনির ভিতরকার সারা দেয়ালটা পাতলা ঝিল্লীর চাদর দিয়ে ঢাকা। এই ঝিল্লীর নানারকম রস ও রাসায়নিক দ্রব্য শুষে হজম করে নেবার ক্ষমতা আছে। এই ঝিল্লী পুরুষের শুক্র থেকে সম্ভবত কিছু পুষ্টিও আহরণ করে থাকে, সে কথা পূর্বেই বলা হয়েছে। তাছাড়া এই নরম ঝিল্লীগাত্রে কোনো তীব্র ওষুধ বা অন্য কিছু লাগলে হেজে গিয়ে এর যথেষ্ট হানিও হতে পারে। এখানে কোনো ওষুধ বা অন্য কিছু দ্রব্য প্রয়োগ করবার সময় এই কথাটি বিশেষভাবে স্মরণ রাখা উচিৎ।
ইতিপূর্বে যোনির ভিতর দিকের ছাদ ভেদ করে জরায়ুর কতকটা অংশ বোঁটার মতো ঝুলে থাকার কথা আমরা বলছি। ঐ বোঁটাটি থেকেই জরায়ুর দেহঅংশ শুরু হলো। যদিও জরায়ুর ঐটুকু মাত্র অংশই যোনির ভিতর দিয়ে টের পাওয়া যায়, কিন্তু জরায়ুর বাকি প্রধান অংশটা থাকে তার উপরে তলপেটের মধ্যে। সেখানে সহজে নাগাল পাওয়া যায় না।
জরায়ুর দুই অংশ। একটি হলো তার কন্ঠ, আর অপরটি হলো মূক দেহ। কন্ঠের আবার দুই অংশ,—-খানিকটা থাকে যোনির ভিতরে আর খানিকটা তারও উপরে। তার মধ্যে ঐ প্রথম অংশটার কথাই আগে বলা হলো। এই কন্ঠের ভিতর দিয়ে রয়েছে একটি সরু নালিপথ,তার দুই মুখে দুই ছিদ্র। নিচেকার ছিদ্রটির মুখ রয়েছে যোনির মধ্যে। সেটি অপেক্ষাকৃত বড়। শুক্রবীজ ঐ মুখ দিয়েই জরায়ুতে প্রবেশ করে। উপর দিকের ছিদ্রটি মূল জরায়ুর গহরের ভিতর দিকে। এই ছিদ্র অত্যন্ত সূক্ষ্ম।
এর পরে মূল জরায়ুদেহের কথা। জরায়ুর দেহটি খুব মজবুত ও কঠিন পুরু মাংসপেশী দিয়ে গড়া। এই মাংসপেশী চৈতন্যের ইচ্ছাধীন নয়, অর্থাৎ যেমন সব সাধারণ মাংসপেশীর সাহায্যে আমরা ইচ্ছামত হাত পা নাড়তে পারি, এ সেই ধরণের মাংসপেশী নয়। এর যা কিছু ক্রিয়া হয় তা আমাদের ইচ্ছা ও জ্ঞানের অগোচরে।
জরায়ু দেখতে অনেকটা লম্বাটে ধরণের ন্যাসপাতি অথবা পেয়ারা ফলের মতো, অর্থাৎ যার তলার দিকটা গোল আর বোঁটার দিকটা যেন তার থেকে টেনে খানিকটা সরু এবং লম্বা করা। কিন্তু জরায়ুটি থাকে ঠিক উল্টো ভঙ্গিতে, অর্থাৎ ওর তলার দিকটাই থাকে উপরে আর বোঁটার দিকটা নিচে। এমনিভাবে এটি যোনির উপরভাগে তলপেটের গহরের মধ্যে সামনের দিকে একটু ঝুঁকে দড়ি দিয়ে টাঙানোর মতো অবস্থায় খাড়া ঝুলতে থাকে। এর পিচনে থাকে মলভান্ড, আর সামনে থাকে মূত্রথলী। এমনি আল্গাভাবে ঝুলতে থাকে বলে এর অবস্থানের কোনো ঠিকানা নেই। মলভান্ডে মল জমলে তখন একে সামনের দিকে ঠেলে দেয়, মূত্রথলিতে মূত্র জমলে একে পিছন দিকে ঠেলে দেয়, যোনিমধ্যে লিঙ্গ ঢুকলে একে উপর দিকে ঠেলে দেয়। আবার এই সকল চাপ সরে গেলেই ও পূর্বের যথাস্থানে ফিরে যায়। তার কারণ জরায়ুটি কোনো কঠিন বাঁধন দিয়ে শক্ত করে আটাঁ নয়, দুদিক থেকে তিন জোড়া মাংসবন্ধনী ওক্ব এমনি ভাবে তিন দিক থেকে টাঙিয়েই রেখেছে। এতখানি মুক্তভাবে রয়েছে বলেই সন্তান ধারণের সময় এটি প্রয়োজন মতো বেড়ে গিয়ে সেই অনুসারে নিজের স্থান করে নিতে পারে।
জরায়ুর মাঝখানে আছে একটি তিনকোণা ক্রিভুজের মতো গহর। ওর তিনটি কোণেই তিনটি সূক্ষ্ম ছিদ্র। একটি ছিদ্র রয়েছে নিচে পূর্বোক্ত জরায়ুকন্ঠের দিকে। আর উপরে দুই দিকে দুটি ছিদ্র রয়েছে দুই ডিম্বাবাহী টিউওবের দিকে। ঐ দুই ছিদ্র দিয়েই পাকা ডিম্বাকোষ টিউব থেকে অগ্রসর হয়ে এসে জরায়ুর মধ্যে ঢোকে।
জরায়ুর ভিতরেও রয়েছে ঝিল্লী এবং তাতে রসস্তাবী ছোট ছোট গ্ল্যান্ড আছে। প্রতি
চন্দ্রমাসে আটাশ দিন অন্তর ঐ-ঝিল্লী নবজাত ভ্রূণকে জরায়ুগর্ভে ধারণ করবার জন্য প্রস্তুত হয়। যখন আটাশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবার পরেও সে উদ্দেশ্য বিফল হয় তখন সেই ঝিল্লী ছিন্নভন্ন হয়ে যায়। তার পরে বেগযুক্ত সংকোচন ক্রিয়াতে জরায়ু ছিন্ন ঝিল্লীর সঙ্গে রক্তস্রার মিশিয়ে ঐ গুলিকে বাইরে নির্গত করে দেয়। একেই বলে ঋতুস্রাব । ঋতুস্রাবের পরে জরায়ুর ঝিল্লী আবার নতুন করে প্রস্তুত হয়।
জরায়ুর দুই পাশে রয়েছে দুটি ডিম্বাবাহী টিউব। এই টিউব দুটি তলপেটের গহরের দুই পাশের দিকে লম্বমান থেকে ফেদেলের মতো আকার নিয়ে জবাফুলের পাপড়ির মতো উদ্ভিন্ন হয়ে শেষ হয়েছে। ঐ টিউবের রন্ধ্রের ভিতরে চুলের মতো সূক্ষ্ম পল্পবসসমূহের স্পন্দনে অনবরত ঢেউয়ের স্রোত চলেছে জরায়ুর দিকে। জরায়ুতে সদ্যপ্রবিষ্ট চঞ্চলগতি শুক্রকীটের দল এই স্রোতের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে থিক যেন মাছের মতোই স্রোতের বিপরীত দিকে ঠেলে অগ্রসর হয়ে যেতে শুরু করে। টিউবের উদ্ভিন্ন মুখটির কাছাকাছি পর্যন্ত গিয়ে সেখানেই তারা ডিম্বাকোষের সাক্ষাৎ পায় এবং সেখানেই তাদের সংযোগ হয়। এই সংযোগের ফলে কিছুকাল পরে নবজাত ভ্রূণবীজ ডিম্বানালী দিয়ে স্রোতের অনুকুলে চালিত হয়ে জরায়ুতে পুনঃপ্রবেশ করে। তখন থেকে শুরু হয় গর্ভধান।
ডিম্বাকোষ উৎপন্ন হয় ওভারি অর্থাৎ ডিম্বাশয় যন্ত্রে, সে কথা পূর্বে বলা হয়েছে। টিউবের প্রান্তের কাছাকাছি দুদিকে দুটি ডিম্বাশয় গ্ল্যান্ড আছে, আকারে অনেকটা বাদামের মতো। এগুলি বীজ সৃষ্টির ক্রিয়াতে পুরুষের অন্ডকোষেস্থ সুই বিচির মতো। এই ডিম্বাশয় থেকে প্রত্যেক ঋতুস্রাবের পরে একটি (ova) অর্থাৎ ডিম্বকোষ বা স্ত্রী- বীজের সৃষ্টি হয়। বলা বাহুল্য সেই ডিম্বাকোষ প্রায় প্রত্যেকবারেই নষ্ট হয়, ক্বচিৎ কোনবারে ফলপ্রসূ হয়। ডিম্বকোষ দেখতে গোলাকৃতি। শুক্রকীট এসে তীরের ভ্রূণের জম্ম শুরু হয়।
মোটামুটি এইগুলি হলো মেয়েদের বিশিষ্ট যৌনাঙ্গ। যোনি, জরায়ু, ডিম্বনালী ও ডিম্বাশয় দিয়ে নারীর অন্তর্জননাঙ্গ সম্পূর্ণ । কিন্তু এ ছাড়াও নারীর অন্য যেসব স্পর্শকাতর যৌন অঙ্গ, বিশেষ করে রতিমিলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তাহলো-স্তন, ভগাস্কুর ইত্যাদি। বস্তুত নারীদেহের বহুস্থানের বহু নার্ভ যৌনমিলনকালে সাড়া জাগিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। বলতে গেলে সারা দেহটাই নারীর যৌনাঙ্গ সমূহের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে।
সুমুখ দিকে খানিকটা এসেও ছোট দরজা দুটি খুব পাতলা হয়ে এক জায়গাতে মিলিয়ে গেছে। ঠিক তার সামনেই প্রায় হাড়ের কাছাকাছি জায়গাতে উঁচু হয়ে আছে। পুরুষের লিঙ্গের অনুকরণে খুব ছোট একটি বোটাঁর মতো ক্লিটরিস, যাকে সংস্কৃতে বলে ভগাস্কুর, অথবা শিশ্নিকা। এটি পুরুষের শিশ্নের অনুকরণে তৈরি বলেই ওর ঐ নাম। পুরুষের লিঙ্গের মুন্ডের উপর যেমন একটি ছত্র আছে, এর উপরেও তেমনি একটি ছত্র একে ঘিরে আছে। অনেক সময় এই অঙ্কুরটি এতই ছোট থাকে যে ছত্র ভালো করে ফাঁক না করলে তা মোটে দেখাই যায় না। কিন্তু দেখা না গেলেও আঙ্গুল দিয়ে নাড়লে এটিকে শক্ত একটি বোঁটার মতো স্পষ্ট টের পাওয়া যায়। এই সামান্য অঙ্কুরের যৌন স্পর্শসুখ অনুভব করবার শক্তি অনেক বেশি, এমন কি পুরুষের লিঙ্গমুন্দের চেয়েও বেশি। কোনো সামান্যমাত্র মৃদু স্পর্শে এটি উত্তেজিত হয়ে কঠিন হয়ে উঠে। বিস্তর সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম নার্ভের অনুভূতিসম্পন্ন তন্ত এখানে এসে জড়ো হয়েছে। পুরুষের প্রধান যৌনাঙ্গ লিঙ্গের মতো স্পঞ্জজাতীয় পদার্থ দিয়ে এটিও তৈরি, এবং উত্তেজিত হলে এটিও রক্তাধিক্যের ফলে সুপ্ত অবস্থা থেকে খাড়া হয়ে জেগে ওঠে। যদিও আকারে খুবই ছোট, কিন্তু যৌন সুখ অনুভব করবার এইটিই হলো নারীদেহের প্রধান কামকেন্দ্র। সঙ্গমের সময় এইটির উপর নিয়ত ঘর্ষণ লাগতে থাকে। তখন ওরই উত্তেজনাতে সর্ব শরীরে যে ঘন ঘন রোমাঞ্চ উপস্থিত হয়, তাকে বলে বেপথু। ওর ছত্রটি তখন আপনাআপনি ছড়িয়ে ফাঁক হয়ে গিয়ে অঙ্কুরের মুখটি উত্তেজিত অবস্থায় আরো ঘর্ষণ লাভের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
ঐ অঙ্কুর এবং তার চারপাশের ছত্রের ব্যবধানে জামার পকেটের কোনগুলির মতো নানারকম খাঁজ করা আছে। ঐ সব খাজের মধ্যে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম গ্ল্যান্ড থেকে একরকম তৈলাক্ত স্বেদবস্ত নির্গত হয়। তারও ইংরেজী নাম স্মেগমা, যে জিনিসটির কথা পুরুষ লিঙ্গের বেলাতেও একবার বলা হয়েছে। সদ্যনিঃসৃত তাজা অবস্থায় এর একটা মিষ্ট মিষ্ট সিঘ্রাণ আছে। স্ত্রীলোকের সারা অঙ্গে যে বিশেষ একরকম সুগন্ধ টের পাওয়া যায়, যা অনেক সময় পুরুষদের মনে উম্মাদনা আনে, তা সচরাচর এর থেকেই জম্মায়। আমরা যে পদ্মিনী শঙ্খিণী প্রভৃতি নারীদের এক একরকম দেহগন্ধের বর্ণনা শুনে থাকি, তার সঙ্গে এই জিনিসের গন্ধেরই সম্ভবত বিশেষ সম্পর্ক আছে। কিন্তু ঐ স্মেগমার তাজা অবস্থাতেই তার সেই মিষ্ট সদগন্ধটুকু থাকে। স্মেগমা শুকিয়ে বাসি হয়ে লেগে থাকলে দু-একদিনের মধ্যেই সেটা পচে যায় এবং তখন তার থেকে তীব্র একটা দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে। শুধু তাই নয়, মেয়েদের মূত্রত্যাগের পরে সেই মূত্র ঢুকে গিএ তারও কিছু কিছু অংশ ঐ পকেটের মতো ঘুঁজি ঘুঁজি খাঁজগুলির মধ্যে ঢুকে যায়, এবং স্মেগমার সঙ্গে মিশে গিয়ে সেটিকে আরো বেশি দুর্গন্ধ যুক্ত করে। মেয়েদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো ভাবে যে, যে-অঙ্গটি সর্বক্ষণ ঢাকাই রয়েছে সেখানে অমন একটু দুর্গন্ধ থাকলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু অঙ্গ ঢেকে রাখলেও তার গন্ধ ঢাকা থাকে না। মেয়েদের পক্ষে প্রস্রাবের পরে ও স্নানের সময় ওখানকার ছত্রচর্ম ফাঁক করে অঙ্কুরের আসপাশে সমস্ত খাঁজগুলি পানি-সাবান দিয়ে অথবা শুধুই প্রচুর পানি দিয়ে প্রত্যহ পরিস্কার করে ধুয়ে ফেলা উচিৎ, এবং শুকিয়ে যাওয়া বাসি স্মেগমা লেগে থাকলে তাও সম্পূর্ণরূপে দূর করে ফেলা উচিৎ। মেয়েদের পরিছন্ন থাকবার পক্ষে এটি একটি বিশেষ নিয়ম। স্ত্রী যৌনাঙ্গ বা যোনির কোনো অংশকেই দুর্গন্ধ যুক্ত হতে দেওয়া উচিৎ নয়। দুর্গন্ধ মাত্রই অপরিচ্ছন্নতার পরিচায়ক। আর ওতে বিষাক্ত জীবাণুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে সহজেই যোনিস্থানে নানারকম কষ্টদায়ক রোগ এসে উপস্থিত হতে পারে। পচা জিনিসের সন্ধান পেলেই রোগের জীবাণু সেখানে এসে বাসা বাঁধে। মেয়েদের যোনিস্থানে এটার খুবই সম্ভাবনা। তার কারণ মেয়েদের মল নির্গমের স্থান, ঋতুস্রাব নির্গমের স্থান, মূত্র নির্গমের স্থান, আর স্মেগমা জম্মাবার স্থান, সমস্তই খুব কাছাকাছি। তাই এটার সঙ্গে ওটা মিশে নেবার বিষয়। ছোট দরজা দুটি ফাঁক করে ধরলে অঙ্কুরের ঠিক নিচেই খানিকটা লালবর্ণ ঝিল্লীছাওয়া প্রশস্ত জায়গা রয়েছে দেখতে পাওয়া যায়। ওকে ইংরেজীতে বলে ভেস্টিবিউল, বাংলায় বলা যায় দেউড়ি। এই দেউড়িতে দুটি ছোট বড় ছিদ্র বা রন্ধ্রমুখ আছে। তার মধ্যে একটি ছিদ্র খুবই ছোট। সেটি
আছে অঙ্কুরের একটু নিচেই। সেটি হলো মূত্রছিদ্র। এখান দিয়েই মেয়েদের মূত্র নির্গত হয়, এবং তা পুরুষদের মতো একটি নির্দিষ্ট সরু ধারে নির্গত হতে পারে না।
দ্বিতীয়টি হলো যোনিমুখ। একে ছিদ্রের বদলে বিবর বলাই উচিৎ, কারণ এর পরিধি প্রায় এক ইঞ্চির কম নয়। সঙ্গমের সময় পুরুষের প্লিরধান যৌনাঙ্গ দেউড়ি পার হয়ে এই ববরের মুখ দিয়ে ঢুকেই যোনিগুহাতে প্রবেশ করে। আবার প্রসবের সময় সন্তান এই বিবরের মুখ দিয়েই জরায়ু থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। বলা বাহুল্য তখন এর মুখটি চাড় পেয়ে অনেক বেশি বড় হয়ে যায়।
এই যোনিমুখের ফাঁকটি চিৎ হয়ে শুলেও খোলা গর্তের মতো দেখায় না। এটি দেখায় যেন অর্ধেক মুখবোজা এবড়োখেবড়ো একটা ফাটলের মতো। তার কারণ দুইপাশ থেকে ঠেলে আসা মাংসাদির দ্বার আর ভিতরকার যোনিগাত্রের সামনে ঠেলা চাপের দ্বারা এই গর্তের মুখটা প্রায় বোজার মতোই থাকে। যারা সন্তান প্রসব করেছে তাদের পক্ষে এটা তার চেয়ে আরো খানিকটা ফাঁক হয়ে যায় মাত্র। কিন্তু হাঁটু গেড়ে উবু হয়ে মাথাটা ও বুকটা মাটি সমান নিচু করলে পিছনদিক থেকে যোনিমধ্যে বায়ু প্রবেশ করে এবং তখন দেখা যায় যে দুই দিকের চাপ আলগা হয়ে ঐ গর্তের মুখটি খুলে ফাঁক হয়ে গেছে। ডাক্তারি পরীক্ষার সময় চিৎ করে শুইয়ে মেয়েদের যোনির মধ্যে কিছুই দেখবার উপায় নেই। স্পেকুলাম নামক যন্তের দ্বারা দুই দিক থেকে লেবিয়ার দরজা ফাঁক করে তখন যা কিছু দেখা চলে।
তবে সঙ্গমের সময় এত সহজে পুরুষ লিঙ্গ ওর মধ্যে প্রবেশ করে কেমন করে?
সেটাও এখানে বলে রাখা দরকার। দেউড়ির গায়ের অন্তরালে দুপাশে দুটি করে চারটি ছোট ছোট গ্ল্যান্ড লুকিয়ে আছে, তার সূক্ষ্ম নলগুলি যোনিগর্তের মুখের কাছেই উন্মুক্ত হয়েছে। যৌন উত্তেজনা এসে পড়লেই ঐ সকল গ্ল্যান্ড থেকে এক রকম পিচ্ছিল লালার মতো রস ঝরতে শুরু হয় এবং সমস্ত যোনিমুখটি সেই রসে ভিজে গিয়ে পিচ্ছিল হয়ে ওঠে। তাছাড়া লেবিয়া দুটিও উত্তেজনায় ফুলে ওঠে একটু ফাঁক হয়ে পড়ে। তখন সেই পিচ্ছিল যোনিমুখ দিয়ে সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত মাংসদন্ডৎ পুরুষ – লিঙ্গ অনায়াসে ঠেলে প্রবেশ করতে পারে। তার অগ্রগতির চাপে যোনিদ্বারের বোজা দেয়াল তখন দুপাশ থেকে আপনিই আরো বেশি ফাঁক হয়ে যায়। তবে যদি ঐ পিচ্ছিলকারী রস স্বভাবত পরিমাণে খুব কম হয়, কিংবা কারো পক্ষে যদি সেরস দেখা দিতে খুবই বিলম্ব হয়, তাহলে লিঙ্গ প্রবেশের সময় উভয় পক্ষেরই অল্পবিস্তর আঘাত লাগবার এবং নরম স্থানগুলি একটু একটু ছিঁড়ে যাবার সম্ভাবনা । এই সকল ক্ষেত্রে কিছু কৃত্রিম পিচ্ছিলকারী জিনিস দিয়ে যোনিমুখ ভিজিয়ে নরম করে নেওয়া দরকার হয়ে পড়ে।
আদৌ যারা অনুগত, অর্থাৎ আগে কখনো সঙ্গমে নিযুক্ত হয়নি, এমন আনকোরা কুমারীদের যোনিমুখ অধিকন্ত একটি পাতলা চামড়া দিয়ে অল্পাংশ কিংবা অধিকাংশ ঢাকা থাকে। পর্দাটিকে বলে হাইমেন, আমাদের ভাষাতে বলে সতীচ্ছদ কিংবা কুমারী-পর্দা। এই পর্দা যাদের যোনির গর্তমুখের অনেকখানি স্থান জুড়ে আছে, তাদের পক্ষে এটিকে না ছিড়ে ফেলা পর্যন্ত লিঙ্গ বা অন্য কোনো বস্তু যোনির মধ্যে সহজে ঢুকতে পারে না। তবে প্রথম সঙ্গমের সময় লিঙ্গের আঘাতে এটি প্রায়ই ছিঁড়ে যায়। লোকে তাই মনে করে এটি ছেড়া না থাকলেই বুঝতে হবে যে যোনিটি তাহলে আজ পর্যন্ত একবারও ব্যবহৃত হয়নি। সেই জন্য হয়তো এর নামও দেওয়া হয়েছিল সতীচ্ছদ। কিন্তু এরূপ ধারণা ভুল। সকলের পক্ষেই যে এমন ঘটবে তার কোনো মানে নেই। অনেকের সতীচ্ছদ লেগে থাকা সত্ত্বেও পাশে যথেষ্ট ফাঁক থাকার দরুণ না ছিঁড়ে সঙ্গম করতে পারা অনায়াসে সম্ভব। আবার অনেকের হয়তো আঙ্গুলের দ্বারা বা অন্য কোনো উপায়ে সতীচ্ছদটি আপনা থেকেই ছিঁড়ে গেচে, অথচ তখন পর্যন্ত তাদের প্রকৃত পুরুষ সংসরগএকবারও ঘটেনি। সুতরাং ওর ছেড়া বা না ছেঁড়ার দ্বারা কিছু মীমাংসা হয় না।
যোনিমুখের পরেই আসল স্ত্রী-যোনি, আমরা গুহা বলছি, সঙ্গমের সময় যার ভিতরে লিঙ্গ সম্পূর্ণরূপে প্রবেশ করে এবং যার ভিতর দিয়ে প্রতিমাসে ঋতুস্রাব নির্গত হয়। এটি হলো শরীরের ভিতরকারই যন্ত্র। প্রকাশ্য যৌন অঙ্গ একে বলা চলবে না। এরপর থেকে অন্যান্য সব কিছুই হলো ভিতরকার যন্ত্র।
এই যোনি আসলে একটি ফাঁপা নলের মতো একরকমের মাংসাধার মাত্র। কিন্তু ফাঁপা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি কখনো ফাঁক হয়ে থাকে না। এর সামনের দেয়াল এবং পিছনের দেয়াল দুটি দুদিক থেকে ঝুঁকে এসে নলের ভিতরকার সমস্ত পথটি বরাবর
বুজিয়ে রেখেছে। যখন ওর মধ্যে কিছু প্রবেশ করবে তখনই নলটি ফাঁক হয়ে যাবে, আবার সেটি বেরিয়ে এলেই অমনি বুজে যাবে।
স্ত্রীযোনির এই সঙ্গম প্রায় তিন ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এটি কিন্তু সরল রেখার মতো সোজা নয়। ভিতরে অগ্রসর হলেই জানা যাবে এটি উপর দিকে যেতে যেতে ক্রমশ সামনের দিকে একটু নুয়জের মতো বেঁকে রয়েছে। এর ভিতরের পরিধিরও মাপের কোনো স্থিরতা নেই। প্রয়োজন হলে মাংসপেশীর ক্রিয়ার দ্বারা এটি অনেকখানি
ফাঁদালো অথবা সংকুচিত হতে পারে। দুই রকম মাংসপেশী এর উপর ক্রিউয়া করে। একরকম সুমুখের দিকে আর একরকম ওর উপকার দিকে । সময় সময় ঐ রকম মাংসপেশী উত্তেজনায় তাড়াতাড়ি সংকোচন ও প্রসারণের ফলে কুন্থন ও আক্ষেপের মতো ক্রিয়া করতে পারে। সঙ্গমের সময় এর এই ক্রিয়ার দ্বারা লিঙ্গের উপর চাপ দিয়ে দিয়ে তাকে উত্তেজিত করিয়ে শুক্রপাত করাবার পক্ষে খুব সুবিধা হয়। এছাড়া সঙ্গমলাভের যখন মেয়েদের চরম তৃপ্তি ঘটে তখনও ঐ মাংসপেশীগুলির দ্বারাই যোনির মধ্যে পুনঃ পুনঃ ঐরূপ আক্ষেপ হতে থাকে। এই মাংসপেশীগুলির মলদ্বারের সঙ্গেও যোগ আছে, কাজেই এখানে আক্ষেপ হলে তখন সেখানেও তাই হয়। এই যোনিনালী, আর সামনের দিকে আছে মূত্রধার ও মূত্রনালী। ঐ দুই রকম নলের মাঝখানে সমান্তরালভাবে যোনিটি অবস্থায় করছে।
স্ত্রী যোনির ভিতরকার দেয়ালগুলি রুক্ষ। তার সারা গাত্র কুঁচকে কুঁচকে অনেকটা এবড়োখেবড়ো ধরনের হয়। এতে অল্প বাধাপ্রাপ্ত হওয়াতে সঙ্গমকালে লিঙ্গের ঘর্ষণের পক্ষে খুব সুবিধা হয়। এর দেয়ালের গায়ের চারিদিক থেকে একরকম দুধের মতো সাদা রস নির্গত হয়, তার দ্বারা এটি সর্বক্ষণ ভিজে ও নরম অবস্থাতেই থাকে। সেই রসের মধ্যে আছে কিছু ল্যাকটিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড যোনির স্বাস্থ্যরক্ষক ও জীবাণুনাশক। খুব বেশি তীব্র হলে এর দ্বারা পুংবীজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, কিন্তু প্রায়ই এটা তেমন বেশি তীব্র হয় না।
স্ত্রী প্যোরধান যৌনাঙ্গ যোনির নল বা গুহাটি উপর দিকে যেখান পর্যন্ত উঠে থেমে গেছে, অর্থাৎ যেখান পর্যন্ত গিয়ে গন্তব্য পথটি শেষ হয়েছে, সেখানটাকে বলে ওর ভল্ট বা ছাদ। কোনো কোনো ঘরের ছাদের মাথা ফুঁড়ে যেমন যেমন খানিকটা ভেন্টিলেটরের পাইপ নিচের দিকে ঝুলে থাকে, ঠিক তেমনিভাবে জরায়ুর মুখটি শক্ত খানিকটা লম্বা বোঁটার মতো হয়ে যোনিনলের ছাদ ফুঁড়ে নিচের দিকে ঝুলে আছে। যোনির মধ্যে আঙ্গুল চালিয়ে দিলে খানিকটা পর্যন্ত গিয়ে এই বোঁটাটি আঙ্গুলে ঠেকছে টের পাওয়া যায়। এমনি ভাবে ঝুলে থাকার দরুণ ঐ জরায়ুর বোঁটার সামনের দিকে খানিকটা এবং পিছন দিকে খানিকটা পকেটের মতো খাঁজ রয়ে গেছে। তার মধ্যে সামনের খাঁজটি অগভীর, পিছনের খাঁজটি অপেক্ষাকৃত কিছু গভীর। যনির মাপের চেয়ে যদি সঙ্গমকারীর লিঙ্গের মাপ কিছু বড় হয়, তখন লিঙ্গটি সামনের খাঁজে না ঢুকে ঐ পিছনের খাঁজে ঢুকে যায়, আর তার মধ্যেই শুক্রপাত করে।
স্ত্রী-যোনির ভিতরকার সারা দেয়ালটা পাতলা ঝিল্লীর চাদর দিয়ে ঢাকা। এই ঝিল্লীর নানারকম রস ও রাসায়নিক দ্রব্য শুষে হজম করে নেবার ক্ষমতা আছে। এই ঝিল্লী পুরুষের শুক্র থেকে সম্ভবত কিছু পুষ্টিও আহরণ করে থাকে, সে কথা পূর্বেই বলা হয়েছে। তাছাড়া এই নরম ঝিল্লীগাত্রে কোনো তীব্র ওষুধ বা অন্য কিছু লাগলে হেজে গিয়ে এর যথেষ্ট হানিও হতে পারে। এখানে কোনো ওষুধ বা অন্য কিছু দ্রব্য প্রয়োগ করবার সময় এই কথাটি বিশেষভাবে স্মরণ রাখা উচিৎ।
ইতিপূর্বে যোনির ভিতর দিকের ছাদ ভেদ করে জরায়ুর কতকটা অংশ বোঁটার মতো ঝুলে থাকার কথা আমরা বলছি। ঐ বোঁটাটি থেকেই জরায়ুর দেহঅংশ শুরু হলো। যদিও জরায়ুর ঐটুকু মাত্র অংশই যোনির ভিতর দিয়ে টের পাওয়া যায়, কিন্তু জরায়ুর বাকি প্রধান অংশটা থাকে তার উপরে তলপেটের মধ্যে। সেখানে সহজে নাগাল পাওয়া যায় না।
জরায়ুর দুই অংশ। একটি হলো তার কন্ঠ, আর অপরটি হলো মূক দেহ। কন্ঠের আবার দুই অংশ,—-খানিকটা থাকে যোনির ভিতরে আর খানিকটা তারও উপরে। তার মধ্যে ঐ প্রথম অংশটার কথাই আগে বলা হলো। এই কন্ঠের ভিতর দিয়ে রয়েছে একটি সরু নালিপথ,তার দুই মুখে দুই ছিদ্র। নিচেকার ছিদ্রটির মুখ রয়েছে যোনির মধ্যে। সেটি অপেক্ষাকৃত বড়। শুক্রবীজ ঐ মুখ দিয়েই জরায়ুতে প্রবেশ করে। উপর দিকের ছিদ্রটি মূল জরায়ুর গহরের ভিতর দিকে। এই ছিদ্র অত্যন্ত সূক্ষ্ম।
এর পরে মূল জরায়ুদেহের কথা। জরায়ুর দেহটি খুব মজবুত ও কঠিন পুরু মাংসপেশী দিয়ে গড়া। এই মাংসপেশী চৈতন্যের ইচ্ছাধীন নয়, অর্থাৎ যেমন সব সাধারণ মাংসপেশীর সাহায্যে আমরা ইচ্ছামত হাত পা নাড়তে পারি, এ সেই ধরণের মাংসপেশী নয়। এর যা কিছু ক্রিয়া হয় তা আমাদের ইচ্ছা ও জ্ঞানের অগোচরে।
জরায়ু দেখতে অনেকটা লম্বাটে ধরণের ন্যাসপাতি অথবা পেয়ারা ফলের মতো, অর্থাৎ যার তলার দিকটা গোল আর বোঁটার দিকটা যেন তার থেকে টেনে খানিকটা সরু এবং লম্বা করা। কিন্তু জরায়ুটি থাকে ঠিক উল্টো ভঙ্গিতে, অর্থাৎ ওর তলার দিকটাই থাকে উপরে আর বোঁটার দিকটা নিচে। এমনিভাবে এটি যোনির উপরভাগে তলপেটের গহরের মধ্যে সামনের দিকে একটু ঝুঁকে দড়ি দিয়ে টাঙানোর মতো অবস্থায় খাড়া ঝুলতে থাকে। এর পিচনে থাকে মলভান্ড, আর সামনে থাকে মূত্রথলী। এমনি আল্গাভাবে ঝুলতে থাকে বলে এর অবস্থানের কোনো ঠিকানা নেই। মলভান্ডে মল জমলে তখন একে সামনের দিকে ঠেলে দেয়, মূত্রথলিতে মূত্র জমলে একে পিছন দিকে ঠেলে দেয়, যোনিমধ্যে লিঙ্গ ঢুকলে একে উপর দিকে ঠেলে দেয়। আবার এই সকল চাপ সরে গেলেই ও পূর্বের যথাস্থানে ফিরে যায়। তার কারণ জরায়ুটি কোনো কঠিন বাঁধন দিয়ে শক্ত করে আটাঁ নয়, দুদিক থেকে তিন জোড়া মাংসবন্ধনী ওক্ব এমনি ভাবে তিন দিক থেকে টাঙিয়েই রেখেছে। এতখানি মুক্তভাবে রয়েছে বলেই সন্তান ধারণের সময় এটি প্রয়োজন মতো বেড়ে গিয়ে সেই অনুসারে নিজের স্থান করে নিতে পারে।
জরায়ুর মাঝখানে আছে একটি তিনকোণা ক্রিভুজের মতো গহর। ওর তিনটি কোণেই তিনটি সূক্ষ্ম ছিদ্র। একটি ছিদ্র রয়েছে নিচে পূর্বোক্ত জরায়ুকন্ঠের দিকে। আর উপরে দুই দিকে দুটি ছিদ্র রয়েছে দুই ডিম্বাবাহী টিউওবের দিকে। ঐ দুই ছিদ্র দিয়েই পাকা ডিম্বাকোষ টিউব থেকে অগ্রসর হয়ে এসে জরায়ুর মধ্যে ঢোকে।
জরায়ুর ভিতরেও রয়েছে ঝিল্লী এবং তাতে রসস্তাবী ছোট ছোট গ্ল্যান্ড আছে। প্রতি
চন্দ্রমাসে আটাশ দিন অন্তর ঐ-ঝিল্লী নবজাত ভ্রূণকে জরায়ুগর্ভে ধারণ করবার জন্য প্রস্তুত হয়। যখন আটাশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবার পরেও সে উদ্দেশ্য বিফল হয় তখন সেই ঝিল্লী ছিন্নভন্ন হয়ে যায়। তার পরে বেগযুক্ত সংকোচন ক্রিয়াতে জরায়ু ছিন্ন ঝিল্লীর সঙ্গে রক্তস্রার মিশিয়ে ঐ গুলিকে বাইরে নির্গত করে দেয়। একেই বলে ঋতুস্রাব । ঋতুস্রাবের পরে জরায়ুর ঝিল্লী আবার নতুন করে প্রস্তুত হয়।
জরায়ুর দুই পাশে রয়েছে দুটি ডিম্বাবাহী টিউব। এই টিউব দুটি তলপেটের গহরের দুই পাশের দিকে লম্বমান থেকে ফেদেলের মতো আকার নিয়ে জবাফুলের পাপড়ির মতো উদ্ভিন্ন হয়ে শেষ হয়েছে। ঐ টিউবের রন্ধ্রের ভিতরে চুলের মতো সূক্ষ্ম পল্পবসসমূহের স্পন্দনে অনবরত ঢেউয়ের স্রোত চলেছে জরায়ুর দিকে। জরায়ুতে সদ্যপ্রবিষ্ট চঞ্চলগতি শুক্রকীটের দল এই স্রোতের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে থিক যেন মাছের মতোই স্রোতের বিপরীত দিকে ঠেলে অগ্রসর হয়ে যেতে শুরু করে। টিউবের উদ্ভিন্ন মুখটির কাছাকাছি পর্যন্ত গিয়ে সেখানেই তারা ডিম্বাকোষের সাক্ষাৎ পায় এবং সেখানেই তাদের সংযোগ হয়। এই সংযোগের ফলে কিছুকাল পরে নবজাত ভ্রূণবীজ ডিম্বানালী দিয়ে স্রোতের অনুকুলে চালিত হয়ে জরায়ুতে পুনঃপ্রবেশ করে। তখন থেকে শুরু হয় গর্ভধান।
ডিম্বাকোষ উৎপন্ন হয় ওভারি অর্থাৎ ডিম্বাশয় যন্ত্রে, সে কথা পূর্বে বলা হয়েছে। টিউবের প্রান্তের কাছাকাছি দুদিকে দুটি ডিম্বাশয় গ্ল্যান্ড আছে, আকারে অনেকটা বাদামের মতো। এগুলি বীজ সৃষ্টির ক্রিয়াতে পুরুষের অন্ডকোষেস্থ সুই বিচির মতো। এই ডিম্বাশয় থেকে প্রত্যেক ঋতুস্রাবের পরে একটি (ova) অর্থাৎ ডিম্বকোষ বা স্ত্রী- বীজের সৃষ্টি হয়। বলা বাহুল্য সেই ডিম্বাকোষ প্রায় প্রত্যেকবারেই নষ্ট হয়, ক্বচিৎ কোনবারে ফলপ্রসূ হয়। ডিম্বকোষ দেখতে গোলাকৃতি। শুক্রকীট এসে তীরের ভ্রূণের জম্ম শুরু হয়।
মোটামুটি এইগুলি হলো মেয়েদের বিশিষ্ট যৌনাঙ্গ। যোনি, জরায়ু, ডিম্বনালী ও ডিম্বাশয় দিয়ে নারীর অন্তর্জননাঙ্গ সম্পূর্ণ । কিন্তু এ ছাড়াও নারীর অন্য যেসব স্পর্শকাতর যৌন অঙ্গ, বিশেষ করে রতিমিলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তাহলো-স্তন, ভগাস্কুর ইত্যাদি। বস্তুত নারীদেহের বহুস্থানের বহু নার্ভ যৌনমিলনকালে সাড়া জাগিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। বলতে গেলে সারা দেহটাই নারীর যৌনাঙ্গ সমূহের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে।
No comments:
Post a Comment